লোগো (ইংরেজি: Logo) এক ধরনের গ্রাফিক চিহ্ন বা প্রতীক যা সাধারণতঃ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, সংস্থা এবং সাহায্য-সহযোগিতার লক্ষ্যে পরিচিতির জন্য জনগণের কাছে তুলে ধরা হয়। লোগো যথার্থ গ্রাফিক নক্সা হিসেবে প্রতীক কিংবা চিহ্নে প্রকাশ করা হয় অথবা প্রতিষ্ঠানের নাম বা এর অংশবিশেষকে ফুটিয়ে তোলা হয়। ব্যক্তি, দল কিংবা প্রতিষ্ঠানের বিশেষ চিহ্ন হিসেবে এতে ছবি কিংবা অঙ্কনের ছোঁয়া লক্ষ্য করা যায়। সাধারণতঃ এতে প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের চিন্তাধারা, বিক্রিত দ্রব্যসামগ্রীকে অক্ষরের সাহায্যে বিজ্ঞাপনচিত্র আকারে পরিবেশন করা হয়। যখন একজন সাধারণ ব্যক্তি লোগো চিত্রটি দেখে, তখন সে প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টিভঙ্গী সম্পর্কে অবগত হয় কিংবা প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়।
লোগোয় অক্ষর এবং শব্দ উভয়ই থাকতে পারে। অনেক লোগোতেই প্রতিষ্ঠান কিংবা সংস্থার নাম রয়েছে। আবার অনেকগুলোতে খুবই সাধারণ রেখার সাহায্যে এবং অল্প রং ব্যবহারে মাধ্যমে অঙ্কন করা হয়। আবার কিছু লোগো শুধুই সাদা-কালো বর্ণাকৃতির। বিশ্বের অনেক দেশে প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থার লোগোর জন্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। এরফলে অন্য কোন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক একই ধরনের লোগো তৈরী বাধাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সিদ্ধান্ত প্রদান করে যে কোন লোগোটি প্রথম নিবন্ধিত হয়েছে এবং জনসমক্ষে প্রকাশিত হয়েছে। একে কখনো কখনো ট্রেড মার্ক নামে আখ্যায়িত করা হয়।
শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়েই লোগোর ব্যবহার সীমাবদ্ধ নেই। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লোগো রয়েছে। কিছু শহরেরও লোগা আছে। খেলাধূলায় নিয়োজিত ক্লাব বা দলেরও লোগো রয়েছে। এমনকি জনগণও ইচ্ছে করলে তাদের নিজেদের জন্যে লোগো তৈরী করতে পারে।
বর্তমানের লোগো
১৮৭০-এর দশকে আধুনিক লোগো’র বিমূর্ত চিত্র লক্ষ্য করা যায় আমাদের বাস ব্রিউরি কোম্পানীর লাল ত্রিভূজাকৃতির লোগোতে। বর্তমানে অনেক স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থা, পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, ব্র্যান্ড, সেবা প্রদানকারী সংস্থাসহ বিভিন্ন পর্যায়ে অক্ষর, প্রতীক, চিহ্ন কিংবা চিহ্ন-অক্ষরের সমন্বয়ে লোগো ব্যবহার করা হয়। ফলে, হাজারো বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ বিভিন্ন লোগো থেকে মুহূর্তেই সাধারণ জনগণ নির্দিষ্ট লোগোকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন। কার্যকরী লোগোয় প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য লুকিয়ে থাকে। কর্মীর পোষাক থেকে শুরু করে চিঠিপত্র, খাম প্রভৃতিতেও লোগো মুদ্রিত থাকে।
লোগোতে প্রাতিষ্ঠানিক নামের চেয়ে প্রতীকের মাধ্যমেই এর কার্যকারীতা বেশি বলে জানা যায়। বৈশ্বিক বাজারে বিভিন্ন অক্ষরে লোগো তৈরী করা হলেও আরবী ভাষার মাধ্যমে ইউরোপীয় বাজার দখলের চেষ্টা খুব কমই সফলতার মুখ দেখবে। অ-লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রেডক্রস এবং রেডক্রিসেন্টের প্রতীকিরূপ চিহ্নগুলো নামের চেয়েই অধিক কার্যকরী পন্থা। কোকাকোলা’র লোগোকে যে-কোন ভাষায় চিহ্নিত করা হলেও এর নির্দিষ্ট রঙ এবং লেখাগুলোর বক্রতার জন্য এটি বেশি পরিচিতি পেয়েছে।